সুইয়ের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারীদের মেথাডন সেবন অব্যাহত রাখা ও এই কার্যক্রম সম্প্রসারণ বিষয়ক কর্মশালা

20 October, 2016
কেয়ার বাংলাদেশ, সেভ দি চিলড্রেন এবং আইসিডিডিআর,বি -এর যৌথ উদ্যোগে এবং জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনএএসপি) ও মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ১৯ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে তেজগাঁওস্থ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে সুইয়ের মাধ্যমে মাদক গ্রহণকারীদের মেথাডন সেবন অব্যাহত রাখা এবং এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ বিষয়ক একটি কর্মশালা অনুষ্ িত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন কেয়ার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মসূচী পরিচালক ডা: জাহাঙ্গীর হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাননীয় অতিরিক্ত মহাপরিচালক মি: পরিমলকুমার দেব। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ডিরেক্টর ও লাইন ডিরেক্টর ডাঃ মোঃ আনিসুর রহমান। কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন-এর এইচআইভি কর্মসূচীর চিফ অব পার্টি ডা: লিমা রহমান, ইউএন এইডস-এর অফিস ইনচার্জ ডাঃ সায়মা খান এবং আইসিডিডিআর,বি-এর বৈজ্ঞানিক ড. তাসনিম আজিম।
কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান পরামর্শক ডাঃ সৈয়দ ইমামুল হোসেন। ইউএনওডিসিআরএএস/এইচ ১৩ প্রকল্পের অর্থায়নে ২০১০ সালে একটি পাইলট স্টাডির অংশ হিসেবে বাংলাদেশে মাদকব্যবহারকারীদের জন্য মেথাডনের মাধ্যমে ওরাল সাবস্টিটিউশন ট্রিটমেন্ট (ওএসটি) বা মেথাডন মেইনটেনেন্স ট্রিটমেন্ট সেবা শুরু হয়েছিল। আইসিডিডিআর,বি এই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের “স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টিখাত উন্নয়ন কর্মসূচী”ও “গ্লোবালফান্ড-এর অর্থায়নে ৭৫০ জন সুঁই-সিরিঞ্জ-এর মাধ্যমে মাদক নির্ভরশীল ব্যক্তি পাঁচটি কেন্দ্র থেকে মেথাডন গ্রহণ করছেন। পাঁচটি এমএমটি ক্লিনিক-এর মধ্যে দুইটি (জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের আওতাধীন কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ও সেভ দ্য চিলড্রেন-এর আওতাধীন দয়াগঞ্জ পিডব্লিউআইডিডিআইসি) আইসিডিডিআর’বির মাধ্যমে “স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টিখাত উন্নয়ন কর্মসূচী” অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এবং তিনটি (কেয়ার বাংলাদেশ-এর আওতাধীন এসকেদাস, মৌলভীবাজার ও সেভ দ্য চিলড্রেন-এর আওতাধীণ খিলগাঁও ডিআইসি) গ্লোবালফান্ড-এর অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। আইসিডিডিআর,বির কারিগরী সহযোগিতায় সকল কেন্দ্রগুলি পরিচালিত হচ্ছে।
মেথাডন মেইনটেনেন্স ট্রিটমেন্ট (এমএমটি) হল অপিয়েড (আফিমজাত নেশা দ্রব্য) মাদকাসক্তদের জন্য একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে হেরোইন, বিউপ্রেনর্ফিন এবং এর সমগোত্রীয় মাদকে নির্ভরশীল ব্যক্তিদের সেই গোত্রেরই অন্য একটি মাদক মেথাডন দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এমএমটি চিকিৎসা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ প্রস্তাবিত অপিওয়েড মাদকসক্তদের জন্য একটি কার্যকরী, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি। উক্ত চিকিৎসাকালীন সময়ে অপিওয়েড নির্ভরশীল ব্যক্তির মাদকের প্রতি তীব্র আকাঙ্খা থাকে না, তারা স্বাভাবিক জীবনযাপনের দিকে মনোনিবেশ করতে পারে এবং একটি বৃহৎ অংশই তাদের ব্যবহৃত নির্ভরশীল মাদক ও এর সাথে সম্পর্কিত ঝুঁকি ও সমস্যা থেকে নিজেকে নিবৃত রাখতে পারে। এমএমটি মূলত অপিওয়েড সাবস্টিটিউশন থেরাপী (ওএসটি) এর একটি অংশ। যখন সাবস্টিটিউশন মাদক হিসাবে মেথাডন ব্যবহার করা হয় তখন তাকে মেথাডন সাবস্টিটিউশন বা মেইনন্টেনেন্স ট্রিটমেন্ট বলা হয়।
এই মেথাডন সাবস্টিটিউশন ট্রিটমেন্ট, মনো-সামাজিক পরামর্শ বা কাউন্সেলিং সহকারে অথবা ব্যতিরেকে উভয়ভাবেই প্রদান করা যেতে পারে। তবে মনোসামাজিক সেবা সহকারে এই চিকিৎসা প্রয়োগ করলে অপেক্ষাকৃত ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।
জাতিসংঘের এইডস বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডস, মাদক ও অপরাধ নিরাময় সংস্থা ইউএনওডিসি, বিশ্ব সাহায্য সংস্থা, সেভ দ্য চিলড্রেন, আইসিডিআর,বিসহ দেশীয় সংস্থা ঢাকা আহসানিয়া মিশন, ক্রিয়া, আপোস, কেএমএসএস, মুক্ত আকাশ বাংলাদেশ, লাইট হাউজ, স্ব-সহায়য়ক দল- প্রচেষ্টার প্রতিনিধিরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বরেণ্য শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ ও সাংবাদিকরা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
© Copyright 2024 CARE Bangladesh
Photo Credits- Former & Current CARE Staff & Consultants
Powered by: BOL